-
লাসাইনের পরীক্ষায় জৈব যৌগটি সোডিয়ামের সাথে গলানোর প্রধান উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: লাসাইনের পরীক্ষায় সোডিয়ামের সাথে গলানোর মাধ্যমে জৈব যৌগে উপস্থিত নাইট্রোজেন, সালফার এবং হ্যালোজেনকে আয়নিক যৌগে রূপান্তরিত করা হয়, যা পরে সহজে সনাক্ত করা যায়। উদাহরণস্বরূপ:
নাইট্রোজেন: Na + C + N → NaCN
সালফার: 2Na + S → Na₂S
হ্যালোজেন: Na + X → NaX -
জৈব যৌগে নাইট্রোজেনের উপস্থিতি সনাক্ত করতে কোন পরীক্ষাটি ব্যবহৃত হয়?
জৈব যৌগে নাইট্রোজেনের উপস্থিতি সনাক্ত করতে লাসাইনের পরীক্ষা (Lassaigne’s Test) ব্যবহৃত হয়। এই পরীক্ষায় সোডিয়াম ফিউশন এক্সট্রাক্টকে (SFE) ফেরিক ক্লোরাইড (FeCl₃) এবং হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCl) এর সাথে প্রতিক্রিয়া করালে প্রুশিয়ান ব্লু (Prussian Blue) রঙের উৎপন্ন হয়, যা নাইট্রোজেনের উপস্থিতি নির্দেশ করে।
-
কোন পরীক্ষায় কালো রঙের প্রিপিটেট (PbS) গঠিত হয় এবং এটি কোন মৌলটির উপস্থিতি নির্দেশ করে?
লিড অ্যাসিটেট পরীক্ষায় সোডিয়াম ফিউশন এক্সট্রাক্টকে (SFE) অ্যাসিটিক অ্যাসিড এবং লিড অ্যাসিটেটের (Pb(CH₃COO)₂) সাথে প্রতিক্রিয়া করালে কালো রঙের লিড সালফাইড (PbS) প্রিপিটেট গঠিত হয়, যা সালফারের উপস্থিতি নির্দেশ করে।
-
জৈব যৌগে হ্যালোজেন সনাক্তকরণের জন্য কোন পরীক্ষাটি ব্যবহৃত হয় এবং কীভাবে এটি কাজ করে?
জৈব যৌগে হ্যালোজেন সনাক্তকরণের জন্য সিলভার নাইট্রেট (AgNO₃) পরীক্ষা ব্যবহৃত হয়। সোডিয়াম ফিউশন এক্সট্রাক্টকে (SFE) নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO₃) দিয়ে অ্যাসিডিফাই করে তারপর সিলভার নাইট্রেটের সাথে প্রতিক্রিয়া করালে নিম্নলিখিত প্রিপিটেট গঠিত হয়:
সাদা প্রিপিটেট (AgCl): ক্লোরিনের উপস্থিতি নির্দেশ করে।
হালকা হলুদ প্রিপিটেট (AgBr): ব্রোমিনের উপস্থিতি নির্দেশ করে।
গাঢ় হলুদ প্রিপিটেট (AgI): আয়োডিনের উপস্থিতি নির্দেশ করে। -
জৈব যৌগে কার্বন এবং হাইড্রোজেন সনাক্তকরণের জন্য কোন পরীক্ষাটি ব্যবহৃত হয়?
জৈব যৌগে কার্বন এবং হাইড্রোজেন সনাক্তকরণের জন্য যৌগটিকে তামা(II) অক্সাইড (CuO) এর সাথে উত্তপ্ত করা হয়। এতে কার্বন অক্সিডাইজ হয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO₂) এবং হাইড্রোজেন অক্সিডাইজ হয়ে পানি (H₂O) তৈরি করে। CO₂ যদি ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডের (Ca(OH)₂) সাথে প্রতিক্রিয়া করে সাদা প্রিপিটেট (CaCO₃) গঠন করে, তবে কার্বন উপস্থিত। পানি যদি শুষ্ক কপার(II) সালফেটের (CuSO₄) সাথে প্রতিক্রিয়া করে নীল রঙ ধারণ করে, তবে হাইড্রোজেন উপস্থিত।
-
লাসাইনের পরীক্ষায় সোডিয়াম ফিউশন এক্সট্রাক্ট (SFE) প্রস্তুত করার সময় কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?
লাসাইনের পরীক্ষায় SFE প্রস্তুত করার সময় নিম্নলিখিত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত:
পর্যাপ্ত পরিমাণে শুষ্ক সোডিয়াম ব্যবহার করতে হবে।
জৈব যৌগের ছোট পরিমাণ ব্যবহার করতে হবে।
গলানোর প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে এবং সতর্কতার সাথে করতে হবে যাতে বিস্ফোরণ এড়ানো যায়।
গলানোর পর টিউবটি ঠান্ডা করে ডিস্টিল্ড পানিতে সাবধানে ভাঙতে হবে। -
জৈব যৌগে ফসফরাস সনাক্তকরণের জন্য কোন পরীক্ষাটি ব্যবহৃত হয়?
জৈব যৌগে ফসফরাস সনাক্তকরণের জন্য যৌগটি অক্সিডাইজিং এজেন্ট (যেমন সোডিয়াম পারঅক্সাইড, Na₂O₂) দ্বারা উত্তপ্ত করা হয়। এতে ফসফরাস অক্সিডাইজ হয়ে সোডিয়াম ফসফেট (Na₃PO₄) গঠিত হয়। তারপর, এই দ্রবণটি নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO₃) দিয়ে অ্যাসিডিফাই করে অ্যামোনিয়াম মলিবডেটের ((NH₄)₂MoO₄) সাথে প্রতিক্রিয়া করালে হলুদ রঙের প্রিপিটেট গঠিত হয়, যা ফসফরাসের উপস্থিতি নির্দেশ করে।
-
লাসাইনের পরীক্ষায় জৈব যৌগে সালফারের উপস্থিতি কিভাবে সনাক্ত করা হয়?
লাসাইনের পরীক্ষায় সোডিয়াম ফিউশন এক্সট্রাক্ট (SFE) অ্যাসিটিক অ্যাসিড এবং লিড অ্যাসিটেট (Pb(CH₃COO)₂) এর সাথে বিক্রিয়া করালে যদি কালো রঙের PbS (লিড সালফাইড) প্রিপিটেট তৈরি হয়, তবে সালফার উপস্থিত রয়েছে।
-
লাসাইনের পরীক্ষায় জৈব যৌগে সালফারের উপস্থিতি কিভাবে সনাক্ত করা হয়?
সোডিয়াম ফিউশন এক্সট্রাক্ট (SFE) প্রস্তুত করার সময় কী ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়?
উত্তর:
১. একটি পরিষ্কার ও শুকনো টেস্ট টিউবে ছোট টুকরো সোডিয়াম নেওয়া হয়।
2. এতে জৈব যৌগ যোগ করে ধীরে ধীরে উত্তপ্ত করা হয়।
3. উত্তাপ দেওয়ার ফলে সোডিয়ামের সাথে যৌগটি গলে গিয়ে আয়নিক যৌগ তৈরি করে।
4. এই গলিত পদার্থকে ঠান্ডা ডিস্টিল্ড পানিতে ভেঙে এক্সট্রাক্ট (SFE) তৈরি করা হয়। -
ফসফরাস কীভাবে সনাক্ত করা হয়?
যৌগটি Na₂O₂ এর সাথে উত্তপ্ত করলে Na₃PO₄ উৎপন্ন হয়। এটি HNO₃ ও (NH₄)₂MoO₄-এর সাথে প্রতিক্রিয়া করলে হলুদ বর্ণের অ্যামোনিয়াম ফসফোমলিবডেট উৎপন্ন হয়, যা ফসফরাসের উপস্থিতি নির্দেশ করে।
2P + 5Na2O2 → 2Na3PO4 + 2Na2O
Na3PO4 + 3 HNO3 → H3PO4 + 3NaNO3
H3PO4 + 12(NH4)2MoO4 + 3 HNO3 → (NH4)3PO4 .12MoO3 + 21NH4NO3 + 12H2O